অতি সম্প্রতি জাতিসংঘ ঘোষিত সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরষ্কার এসডিজি ডিজিটাল গেম চেঞ্জার অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে আমাদের একশপ। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছরই এই সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কারটি চালু করেছে জাতিসংঘের দুই সংস্থা - জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) । বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের কাছে ডিজিটাল-কমার্স সেবা পৌঁছে দিয়ে গ্রাম ও শহরের মধ্যকার দূরত্ব সাফল্যের সাথে কমিয়ে আনার স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্বের ৯০টি দেশের ৪৫০টিরও বেশি ডিজিটাল উদ্যোগের মধ্য হতে ‘গেম চেঞ্জার ফর প্রসপ্যারিটি’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয় আইসিটি ডিভিশনের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)-প্রকল্পের সফল উদ্যোগ ‘একশপ’ প্ল্যাটফর্ম।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী, এটুআই-এর হেড অব কমার্শিয়াল স্ট্র্যাটেজি রেজওয়ানুল হক জামি এবং এটুআই-এর প্রোগ্রাম এসোসিয়েট (আউটরীচ অ্যান্ড রিসোর্স মোবিলাইজেশন) মো. শাহরিয়ার হাসান।
বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ই-কমার্স ডিপিজি (ডিজিটাল পাবলিক গুড) এবং বিশ্বের প্রথম সহায়ক গ্রামীন ই-কমার্স আর্কিটেকচার মডেল একশপ। বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্র, মধ্যম সারির উদ্যোক্তাদের নিয়ে গঠিত সরকারি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম আমাদের একশপ। এতে ব্যবহৃত আধুনিক ডিজিটাল যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাসকারী উদ্যোক্তাবৃন্দ বা ই-কমার্স ক্রেতারা নিজে অথবা স্থানীয় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের প্রতিনিধির সাহায্যে অতি সহজেই ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসের সাথে যুক্ত হতে পারছে। ২০১৯ সালে এর যাত্রা শুরু করা একশপের মাধ্যমে বর্তমানে ১২ হাজারেরও অধিক গ্রামীণ উদ্যোক্তা একশপের মাধ্যমে নিজস্ব পণ্য বিক্রয় করছে। শুধু তাই নয়, ১৬,০০০ এক্সেস পয়েন্ট আর বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সহ দেশের ৮০% লজিস্টিক্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে তোলা দেশব্যাপী সুবিস্তৃত ও নিরবচ্ছিন্ন এক ডেলিভারি নেটওয়ার্কের ফলে একশপ প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা ই-কমার্স ক্রেতাদের দোরগোড়ায় তাদের ক্রয়কৃত পণ্য পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে আসছে। ইতোমধ্যে একশপ ২০ লক্ষেরও অধিক সংখ্যক পণ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
এদেশের গ্রাম ও শহরের ডিজিটাল বৈষম্য হ্রাসে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি একশপ-এর মডেল এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন, তুরস্কে । খুব শীঘ্রই, সোমালিয়াতেও একশপের মডেলের ব্যবহার শুরু হতে যাচ্ছে।
একটি বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিজ্ঞানমনষ্ক দেশ গঠনের উদ্দেশ্যে সময়োপযোগী উদ্ভাবনী ডিজিটাল সল্যুশনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারের অতন্দ্র সহযোগী হিসেবে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) সবসময় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ও ইউএনডিপি’র সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রোগ্রাম স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তথ্য প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে নাগরিক সেবা প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন সহজীকরণে কাজ করে যাচ্ছে।
Comments 0